গুরু মহাশয়
.jpg)
কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর 'অনেক ছিল বলার' কবিতা নিয়ে আলোচনা
মোঃ আরিফ হোসেন
অনেক ছিল বলার
কাজী নজরুল ইসলাম
অনেক ছিল বলার, যদি সেদিন ভালবাসতে।
পথ ছিল গো চলার, যদি দুদিন আগে আসতে।
আজকে মহাসাগর স্রোতে চলেছি দূর পারের পথে
ঝরা পাতা হারায় যথা, সেই আঁধারে ভাসতে
যাই সেই আঁধারে ভাসতে।
গহন রাতি ডাকে আমায়, এলে তুমি আজকে
কাঁদিয়ে গেলে হায় গো আমার বিদায় -বেলার সাঁঝকে।
আসতে যদি হে অতিথি, ছিল যখন শুক্লা তিথি
ফুটতো চাঁপা, সেদিন যদি চৈতালী চাঁদ
হাসতে।
কবি কাজী নজরুল ইসলাম বাংলা ভাষার একজন স্বনামধন্য কবি।তাঁর তুলনা তিনি নিজে। তিনি বাংলা ভাষায় অনেক বিখ্যাত কবিতা লিখেছেন যা পাঠক সমাজে অতি-জনপ্রিয় তালিকার শীর্ষ দিকে স্থান করে নিয়েছে।
'অনেক ছিল বলার ' কাজী নজরুল ইসলাম এর একটি বিখ্যাত প্রেমের কবিতা। এ কবিতায় কবি প্রেমকে অতি নান্দনিকতার সাথে দরদ দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন। কবি প্রথমেই বলেছেন, অনেক ছিল বলার।অর্থাৎ কবির অনেক কথা বলার ছিল যা প্রেমিক প্রেমিকাকে বলে।কবি এরপর তৃতীয় লাইনে বলেছেন, আজকে মহাসাগর স্রোতে চলেছি দূর পারের পথে। এখানে কবি তার না বলা কথা বলতে পারার দুঃখ প্রকাশ করেছেন। অর্থাৎ কবি তাঁর প্রেমিকাকে তাঁর মনের না বলা কথাগুলো যদি বলতে পারতেন তাহলে কি হত সে কথা বুঝিয়েছেন। এ কবিতার প্রতি পরতে পরতে কবি প্রেম লুকিয়ে রেখেছেন। কবি বলেছেন, ফুটত চাঁপা সেদিন যদি চৈতালী চাঁদ হাসতে। অর্থাৎ কবি যদি সেদিন ভালবাসত তাহলে কি হত সে কথা তিনি এ লাইনে বুঝিয়েছেন। এটি একটি অনেক গভীর প্রেমের কবিতা। এ কবিতার মর্ম বুঝতে হলে আমাদের অনেক গভীরে যেতে হবে : কবি হতাশাগ্রস্ত, চিন্তিত, তাঁর প্রেমিকা তাঁকে আশার পথ দেখাচ্ছেন এটা এ কবিতার মূল কথা। এ কবিতা লিখে কবি নিশ্চয়ই অনেক আনন্দ ভোগ করেছেন কারন কবিতাটি অনেক সাবলীলতার সাথে লেখা যা গভীর মর্ম বাণী প্রদর্শন করে। যারা জীবনে প্রেম করে বা অন্য কোন কারনে হতাশাগ্রস্ত তারা এ কবিতা পড়ে আনন্দ পেতে পারে। কবি কবিতার প্রতি পরতে পরতে মানুষকে আনন্দ দেয়ার চেষ্টা করেছেন। কবি বলেছেন, যেদিন আমি হারিয়ে যাব বুঝবে সেদিন বুঝবে - যা কবিতার প্রতি লাইনে পাওয়া যায়।কবির এ কবিতা পড়ে কেউ নিরাশ হবেনা এ কথা নিশ্চিত করে বলা যায়। যে কেউই এ কবিতা পড়ে মনের দান খুঁজে নিতে পারে।
আপনার মন্তব্য আমার অনুপ্রেরণা
ReplyDelete